গবাদি প্রাণির দুর্যোগ মোকাবিলায় খামারীর পূর্বপ্রস্তুতি
বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে প্রতি বছর আমদের দেশে হাজার হাজার গবাদি পশু-পাখি মারা যায়।এর ফলে বিপুল পরিমান অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখিন হয় খামারীরা।যা জাতীয় অর্থনীতিতেও প্রতিক্রিয়া তৈরী করে।বাংলাদেশের মত দ্রুত উন্নয়নশীল দেশের জন্য সেটা আরো মারাত্মক।
Planning for Farmer to confront Disaster for Animal (for English click here)
প্রাকৃতিক দূর্যোগগুলো অনাখাংকিত ভাবে ঘটে যায়।ফলে পূর্ব প্রস্থুতি না থাকলে
সেগুলো মোকাবিলা করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।কিন্তু একটু সতর্ক হলে সময় নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া যায়। আমাদের দেশে মুলত দুইটি দুর্যোগ খুব মারাত্মক।একটি
হল, ঘুর্নিঝড় আর একটি হল বন্যা।আসুন আমরা গবাদি পশু-পাখির দুর্যোগ মোকাবিলা পুর্ব প্রস্তুতি
কি কি হতে পারে তা একটু জানি।
- খামারের চাল মজবুত করে বাঁধাঃ
দূর্যোগকালীন সময় প্রচন্ড বাতাস যাতে খামারের চাল উড়িয়ে
নিতে না পারে সে জন্য খামার এবং খামারের চাল শক্ত করে বাঁধতে হবে।পরবর্তীতে মাটিতে
শক্ত কতে খুঁটি পুতে তার সাথে শক্ত দঁড়ি দিয়ে খামারের চাল বেঁধে দিতে হবে।
- পানি চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থাঃ
বর্ষাকালে বৃষ্টি বা বন্যার পানি যাতে জমে না থাকে সে
জন্য পানি চলা চলের জন্য বিকল্প নালা তৈরি করে রাখতে হবে।কারন হঠাৎ করে পানি বাড়তে
শুরু করলে নালা তৈরী করার সময় পাবেন না।বৃষ্টির পানি শুষে নাবার জন্য খামারের চার পাশে
সবজি চাষ করা যেতে পারে।এটা সাময়িক ভাবে অল্প পানির সমস্যা পূর করে পারে।
- জলাশয়ের চতুর্দিক ঘেরাঃ
খামার যদি নদী,হ্রদ বা জলাশয়ের নিকটবর্তী হয় তা হলে যেদিক
থেকে পানি খামারকে প্লাবিত করতে পারে সেদিকে উঁচু করে বাঁধ তৈরী করতে হবে যতে বন্যার
সময় খামার বন্যার ঝুকই থেকে মুক্ত থাকে।
- খামার সংস্কারঃ
খামারের দরজা ,জানলা দেওয়াল সময় থাকে ঠিক করে নিতে হবে।
- খামারের ক্ষতিকর রাসায়নিক অপসারনঃ
খামারে আশে পাশে কোথাও কোন ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ
কীটনাশক, জীবানুনাশক,ইঁদুর নাশক থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে ।খেয়াল রাখতে হবে কোনভাবেই
যেন তা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গিয়ে খামারের কাঁচাঘাসের সাথে মিশতে না পারে।যে সমস্ত পুকুর
বা অন্য জলাশয়ে এ সমস্ত রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত পানি প্রবেশের সম্ভাবনা আছে তা চারপাশে
ছোট দেওয়া তৈরী করে দিতে হবে।যাতে বৃষ্টি বা
বন্যার পানি সেখানে ঢুকতে না পারে।এ সমস্ত পদার্থ গবাদি পশূর মারাত্মক ক্ষতি, এমন কি
মৃত্যুত কারনও হতে পারে।
- দুর্যোগকালীন গুরুত্বপুর্ন জিনিস সংগ্রহঃ
দুর্যোকালীন বা দূর্যোগ পরবর্তী যে সমস্ত জিনিস প্রয়োজন
হতে পারে তার একটি তালিকা তৈরী করে দুর্যোগের পূর্বেই সংগ্রহ করে রাখতে হবে।কারন বিপদের
সময় এ সমস্ত জিনিস নাও পাওয়া যেতে পারে অথবা পাওয়া গেলেও অধিক পয়সা খরচ হতে পারে।
- প্রয়োজনীয় ব্যক্তিদের নামের তালিকাঃ
প্রয়োজনীয় ব্যক্তিদের নাম ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে রাখতে
হবে।যেমন স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা,উপজেলা প্রশাসন ইত্যাদি।
- গবাদি পশুকে টীকা প্রদানঃ
গবাদি পশু-পাখিকে প্রয়োজনীয় সকল টীকা দিয়ে রাখতে হবে।কারন
দুর্যোগের পরে গবাদি পশুর বিভিন্ন ছোঁয়াছে রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু
টীকা পশু-পাখিকে এ বিপদ থেকে রক্ষা করবে।
- পশু স্থানান্তরঃ
- আশ্রয়ন কেন্দ্রে স্থানান্তরঃ
- আগে মানুষ না কি পশু?
কিছু কিছু সময় এমন সময় আসে যখন নিজের প্রানের তাগিদে পোষা পশু-
পাখিগুলোচ ছেড়ে যেতে হয়।সেক্ষেত্রে পশু-পাখি গুলো জন্য পর্যাপ্ত খাবার এবং পানি সরবরাহ
রেখে যেতে হবে। কম পক্ষে দুই দিনের খাবার -পানি রাখতে হবে। সাধারনত দুই একদিনের মধ্যে
দুর্যোগ্মোকাল বিলায় প্রাথমিম উদ্যোগ নেওয়া হয়ে যায়।অনেক ক্ষেত্রে পশু মারার যায় বা
অসুস্থ হয়ে যায় ।তবে যেগুলো বেঁচে থাকে সেগুলোকে উদ্ধারের পর অবস্থ বুঝে ব্যবস্থা নিতে
হয়।
এভাবে দুর্যোগ মোকাবিলায় পুর্ব প্রস্থুতি
আপনার গবাদি পশু, পোষা প্রাণি বা পাখিকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে। সাথে সাথে দেশ
ও মারাত্মক অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে।
ধন্যবাদান্তে
ডঃসুচয়ন চৌধুরী
ভেটেরিনারি সার্জন
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর
রাঙ্গামাটি সদর
suchayan_chy@yahoo.com
No comments:
Post a Comment